রাজনাথ সিং-এর নির্দেশ: চিন্তায় ঘুম উড়ল বাংলাদেশের
রাজনাথ সিং-এর নির্দেশঃ শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, বাংলাদেশজুড়ে ভারত-বিরোধী মনোভাব আরও তীব্র হয়ে উঠেছে। পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই বাংলাদেশের ভূমি ব্যবহার করে সীমান্তবর্তী রাজ্য এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অংশে নতুন সন্ত্রাসী স্লিপার সেল গঠনের পরিকল্পনা করছে।
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন ‘রাজাকার বাহিনী’ এই পরিকল্পনাকে পুরোপুরি সহযোগিতা করছে। এই ধরনের ঘটনা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জটিল সৃষ্টি করতে পারে।
একের পর এক কুখ্যাত সন্ত্রাসীর মুক্তি নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। এর জেরে দু’দেশের সম্পর্ক আরও জটিল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। এর ফলে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তারা রাতের পর রাত সতর্ক অবস্থায় থাকছেন। (আরও পড়ুনঃ সুনিতাকে ছাড়াই পৃথিবীতে ফিরল মহাকাশযান, দেখুন রুদ্ধশ্বাস অবতরণের দৃশ্য!)
সূত্রের খবর, ভারতীয় সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ পেয়ে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ওয়াকার উজ জামান জরুরি বৈঠক করেছেন সেনা সদর দফতরে। ওই বৈঠকে যশোর, কুমিল্লা, জালালাবাদ, রাজশাহী, রংপুর এবং সৈয়দপুর সেনানিবাসে কর্মরত সামরিক কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সামরিক প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে ৩৬টি নোরা বি-৫২, ১৫৫ মিমি অটোমেটিক কামান, ৪৯টি ডব্লিউএস-২২ মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম এবং সার্বিয়া থেকে কেনা অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইলের অর্ডার দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে, যা ভবিষ্যতের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের আভাস দিচ্ছে।
শুধু সেনাবাহিনী নয়, ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের নির্দেশ শোনার পরই স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা এবং সাবেক সামরিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী দ্রুত পদক্ষেপ নেন। শনিবার তিনি পিলখানায় বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) সদর দফতরে উপস্থিত হয়ে জরুরি বৈঠক করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজিবির সকল এরিয়া কমান্ডার, সেক্টর কমান্ডার এবং ব্যাটালিয়ন কমান্ডাররা সেই বৈঠকে যোগ দেন।
বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিজিবি কর্মকর্তাদের ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন, যাতে কোনো অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়।এই নির্দেশের ফলে সীমান্ত এলাকায় আরও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।
সীমান্তের ওপার থেকে যদি একটি গুলি ছোড়া হয়, বাংলাদেশ থেকে ১০টি গুলি ছোড়া হয় বলে কথা চালু আছে। তবে ভারতীয় সেনাবাহিনী আক্রমণ করলে বাংলাদেশ থেকে তেমন কোনো প্রতিরোধ গড়ে তোলা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন সেনাবাহিনী ও বিজিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। বাংলাদেশের তিন প্রাক্তন সেনাপ্রধানও এমনটাই বলছেন। তাদের মতে, ভারতীয় সেনাবাহিনী বা প্যারা আর্মির প্রশিক্ষণ ও শারীরিক সক্ষমতার মুখোমুখি হওয়া বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত কঠিন হবে।
তবে প্রাক্তন সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদ ও ইকবাল করিম ভূইয়া মনে করেন, বর্তমান ভারত সরকার বাংলাদেশকে পাকিস্তানের মতো শত্রু হিসেবে দেখে না। তাদের মতে, দুই দেশের সম্পর্ক এখনো কূটনৈতিকভাবে সমাধানযোগ্য এবং অযথা সংঘাতে জড়ানোর সম্ভাবনা কম।