Home লাইফস্টাইল শীতের আগে ত্বকের যত্ন: গোড়ালি কিংবা ঠোঁট ফাটা দূর করতে ঘি থাকলেই...

শীতের আগে ত্বকের যত্ন: গোড়ালি কিংবা ঠোঁট ফাটা দূর করতে ঘি থাকলেই হবে?

163
0
ঘি
ছবি: সংগৃহীত।

শীত আসার আগেই আমাদের ত্বক একটু খসখসে আর শুষ্ক হতে শুরু করে, তাই এই সময়ে ত্বকের সঠিক যত্ন নেওয়া খুবই জরুরি। ঠান্ডা বাতাস, শুষ্ক আবহাওয়া আর তাপমাত্রার ওঠানামা ত্বকের স্বাভাবিক আর্দ্রতা কমিয়ে দেয়, যা আমাদের ত্বককে রুক্ষ করে তোলে। শীত আসার আগে থেকে কিছু ছোট ছোট অভ্যাস বদলে নিয়ে আপনি সহজেই ত্বককে সুন্দর, কোমল এবং মসৃণ রাখতে পারেন।

আমাদের হোয়াটসঅ্যাপটেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত হোন -

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

বাঙ্গালির রান্না থেকে রূপচর্চা— ঘি একেবারে সর্বত্রই ব্যবহৃত হয়। আধুনিক পুষ্টিবিদরা তো ঘিকে ‘সুপারফুড’ বলেই মানেন। এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন A, D, E আর অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা আমাদের ত্বকের জন্য উপকারী। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট তো বলতে গেলে সব কাজের কাজি। নিয়মিত ব্যবহার করলে বয়সজনিত ত্বকের সমস্যাগুলি সহজেই নিয়ন্ত্রণে থাকে। বাজারে ত্বকের যত্নের জন্য আলাদা আলাদা ক্রিম পাওয়া গেলেও, ঘি থাকলে সেগুলোর প্রয়োজনই পড়ে না। ঘি ত্বকের জন্য কী কী উপকার করে?চলুন জেনে নেওয়া যাক কিছু সহজ ত্বকের যত্নের টিপস।

কেন ঘি ব্যবহার করবেন?

ঘি হলো প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার, যা ত্বকের গভীরে প্রবেশ করে ত্বককে পুষ্টি জোগায়। এতে থাকে প্রচুর ফ্যাটি অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা ত্বকের শুষ্কতা দূর করে এবং ত্বককে মোলায়েম রাখে। ঘি ত্বকে হালকা বাল্মের মতো কাজ করে এবং যে কোনো প্রাকৃতিক ক্ষতকে দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে।

ময়েশ্চারাইজ়ার: ঘির মধ্যে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিড আর অনেক দরকারি ভিটামিন। যা আপনার ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী। শুষ্ক ত্বককে কোমল করতে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে অসাধারণ কাজ করে। তাই ত্বকের যত্নে আলাদা কিছু খুঁজতে যাওয়ার দরকার নেই। আপনার ঘরে ঘি থাকলেই সারা বছর ত্বক থাকবে নরম আর মসৃণ।

আন্ডার আই ক্রিম: ঘুমের অভাবে কি আপনার চোখের নীচে কালচে দাগ পড়েছে? চিন্তা করবেন না। প্রতিদিন ওই জায়গায় কয়েক ফোঁটা ঘি লাগান। কালচে দাগ কমাতে সাহায্য করবে। আপনার ত্বকের পুষ্টি জোগাবে আর চোখের নিচের দাগগুলিও আস্তে আস্তে কমে যাবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে দেখবেন, আপনার ত্বকও হয়ে উঠবে উজ্জ্বল এবং তাজা।

লিপ বাম এবং আই ক্রিম: ফাটা কিংবা কালচে ঠোঁট? এ ধরনের সমস্যা যেন সবার কাছে পরিচিত! কিন্তু আপনি জানেন কি, এর একটাই সমাধান— ঘি। বাজার থেকে কেনা লিপ বামের পরিবর্তে, একটু ঘি মাখলেই দারুণ ফল পেতে পারেন। আপনার ঠোঁটকে নরম এবং মসৃণ করে, আর কালচেও কমাতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যবহার করলে আপনার ঠোঁট হয়ে উঠবে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর।।

ফেস মাস্ক: একটি দারুণ স্কিনকেয়ার রেসিপি শেয়ার করতে যাচ্ছি। ঘি, মধু এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস— এই তিনটি উপাদান মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন। প্রথমে ভালো করে মুখ ধুয়ে নিন, তারপর এই মাস্কটি মুখে লাগিয়ে আধ ঘণ্টা রেখে দিন। এই মাস্কটি আপনার ত্বকের জেল্লা ধরে রাখতে সাহায্য করবে এবং ত্বককে উজ্জ্বল ও সতেজ করে তুলবে। একবার ব্যবহার করেই দেখতে পারেন, সত্যিই অসাধারণ ফল পাবেন।

ফুট ক্রিম: ফাটা গোড়ালির সমস্যা শুধু শীতের সময়ে নয়, সারা বছরই হতে পারে। বাজারে যে সব ফুট ক্রিম পাওয়া যায়, সেগুলোর মধ্যে অনেক সময় রাসায়নিক থাকে। যা আপনার ত্বকের জন্য ভালো না হতে পারে। তাই ঘরোয়া টোটকা হিসাবে ঘি ব্যবহার করা বেশ কার্যকর। একটু ঘি নিয়ে গোড়ালিতে লাগালে ত্বক নরম এবং মসৃণ হবে, এবং ফাটা অংশগুলোও সহজেই সারিয়ে উঠবে। ঘি খুবই প্রাকৃতিক এবং নিরাপদ, তাই আপনার গোড়ালির যত্নে এটি দারুণ উপকারী।

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন: ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খাবারের দিকে খেয়াল রাখাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বেশি ফলমূল, শাকসবজি, এবং প্রোটিনযুক্ত খাবার খান, যাতে ত্বক ভেতর থেকে পুষ্টি পায়।

ফাটা গোড়ালির জন্য ঘি ব্যবহারের পদ্ধতি

১. গোড়ালি পরিষ্কার করুন: প্রথমে গোড়ালি ভালোভাবে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। গরম পানি ত্বকের মরা কোষগুলোকে নরম করতে সাহায্য করে।

২. ঘি লাগান: গোড়ালি শুকিয়ে গেলে, একটু ঘি নিন এবং ভালোভাবে গোড়ালিতে ম্যাসাজ করুন। যতক্ষণ না ঘি ত্বকে পুরোপুরি মিশে যায়, ততক্ষণ পর্যন্ত ম্যাসাজ করতে থাকুন।

৩. মোজা পরুন: ঘি লাগানোর পর একটা নরম মোজা পরুন। এতে ঘি ত্বকে আরও ভালোভাবে শোষিত হবে, এবং গোড়ালির শুষ্কতা দ্রুত দূর হবে।

৪. রাতে ব্যবহার করুন: এই পদ্ধতিটি রাতে ব্যবহার করা সবচেয়ে ভালো, কারণ ঘুমানোর সময় ত্বক বিশ্রামে থাকে এবং সারার প্রক্রিয়া দ্রুত ঘটে।

ফাটা ঠোঁটের জন্য ঘি ব্যবহারের পদ্ধতি

১. ঠোঁট পরিষ্কার করুন: ঠোঁটের মৃত চামড়া দূর করতে হালকা স্ক্রাবিং করুন। চিনি আর মধু মিশিয়ে প্রাকৃতিক স্ক্রাবার তৈরি করতে পারেন।

২. ঘি লাগান: এরপর সামান্য ঘি নিন এবং ঠোঁটে ভালোভাবে লাগান। আপনি এটি দিনে যেকোনো সময় ব্যবহার করতে পারেন, তবে রাতে ঘুমানোর আগে ব্যবহার করলে আরও ভালো ফল পাবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here