অনুব্রত মণ্ডল: ১৮ মাস পর অবশেষে ঘরে ফিরছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর তিহাড় জেলে কেটেছে তাঁর দীর্ঘ সময়। গত সপ্তাহে জামিন পেয়ে সোমবার রাতে মুক্তি পান অনুব্রত, যাকে সবাই ভালোবেসে ‘কেষ্ট’ বলে ডাকেন। তিহাড় জেল থেকে বেরিয়ে সরাসরি কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের সঙ্গে বিমানে চেপে কলকাতা আসেন তিনি। মঙ্গলবার ভোরে কলকাতা বিমানবন্দরে পা রাখেন, সেখান থেকে রওনা দেন নিজের ঘরবাড়ি বীরভূমের উদ্দেশ্যে। অন্যদিকে, আজই বীরভূমে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুব্রত এবং মমতার মধ্যে কোনও সাক্ষাৎ হয় কি না, সেটাই এখন সবার নজরে।
অনেকদিন পর সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুললেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর সহজ বার্তা, “সবাই ভালো থাকুক। কোনও বিতর্কে যেতে চাই না।” যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আজ তাঁর দেখা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন তিনি। বীরভূমের পথে অনুব্রতের গাড়ি এগিয়ে চলেছে, আর রাস্তার দু’পাশে তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস চোখে পড়ার মতো।
২০২২ সালের ১১ আগস্ট বোলপুরের বাড়ি থেকে সিবিআই অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল। পরে ইডিও তাকে গ্রেফতার করে, এবং একের পর এক সম্পত্তির তথ্য বেরিয়ে আসতে থাকে। তাঁর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ উঠলেও, সাম্প্রতিক সময়ে জামিনে মুক্তি পান তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল। কিছুদিন পরেই জামিনে মুক্ত হলেন অনুব্রতও।
মঙ্গলবার সকালে যখন অনুব্রত মণ্ডল কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছালেন, সেখানে তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন তাঁর বহু অনুগামী। তবে এখনও পর্যন্ত এই দাপুটে নেতা জেলমুক্তির পর কোনও বড় মন্তব্য করেননি।
বীরভূমের নাম শুনলেই যাঁর কথা মনে আসে, তিনি অনুব্রত মণ্ডল। বীরভূমকে তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে তৈরি করেছিলেন তিনি। তাই তাঁর গ্রেফতারির পর এলাকার ভোট রাজনীতিতে প্রভাব পড়বে কিনা, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বেশ জল্পনা ছিল। তবে, কেষ্ট না থাকলেও, গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিশাল ভোটে জয়ী হয়। তাঁর অনুপস্থিতিতেও, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব অনুব্রতকে দলীয় পদ থেকে সরাননি। ২০২২ সালে নেতাজি ইন্ডোরে একটি সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “কেষ্ট একদিন জেল থেকে বেরোবে, আর সেদিন তাকে নায়কের মতো বরণ করে আনতে হবে।